মেধাবী অন্নপূর্ণা বয়ঃসন্ধিতে ভালবাসল সুকল্যাণকে। লেখাপড়া ও প্রেম—দুই বিষয়েই একনিষ্ঠ মেয়েটি মাধ্যমিকে জেলায় প্রথম হল। চাবাগানের ছোট আন্তরিক পরিসর। ছেড়ে সে চলে গেল সদর শহরের সেরা স্কুলে। জগৎ ও জীবন সম্পূর্ণ ভিন্নতর অর্থে উন্মোচিত হতে লাগল। বয়ঃসন্ধির বিবিধ প্রকাশ রক্ষণশীল পিতৃতান্ত্রিক সমাজ দ্বারা ভুলভাবে উপস্থাপিত হয়। তার শিকার হল অন্নপূর্ণা। তাকে ধীরে ধীরে গ্রাস করছে মারণরোগ—এই সম্ভাবনা কেউ বিশ্বাস করেনি। বলা হল, এ সবই তার যৌন বিকার। তার মেধা হারিয়ে যেতে লাগল, সুকল্যাণ অকারণ তাকে ছেড়ে গেল, সাফল্যের চূড়া থেকে ব্যর্থতার কাঠিন্যে আছড়ে পড়া অন্নপূর্ণা প্রেমহীন গভীর হতাশায় তলিয়ে যেতে যেতে একদিন চিঠি লিখতে বসল বাল্যবন্ধুদের। তার প্রাণের বন্ধু পুল্টন ও ভুলাই। একটি ছেলে ও একটি মেয়ের মধ্যে বিশুদ্ধ নিষ্কাম বন্ধুত্ব সম্ভব—রক্ষণশীল সমাজ তা বিশ্বাস করে না। অন্নপূর্ণারা তার মূর্ত প্রতিবাদ। শুধুমাত্র কয়েকটি চিঠি অবলম্বনে লিখিত এই পত্রোপন্যাস, বাল্য থেকে কৈশোর পেরিয়ে তারুণ্য পর্যন্ত বয়ঃসন্ধিকালের আনন্দ, অসহায়তা ও জটিলতার বর্ণন। শেষ পর্যন্ত অন্নপূর্ণার রোগ যখন প্রমাণিত হল, তখন দেরি হয়ে গেছে। মৃত্যু তার বাম হাত ধরেছে। কিন্তু সুকল্যাণের প্রদত্ত আঘাত ছাপিয়ে তার দক্ষিণ হাত ধরেছে এক নতুনতম আশ্বাস। সে দেবায়ন। অতর্কিত মৃত্যুর সম্ভাবনার মধ্যেও দেবায়নের কাছে অপূর্ব প্রেম পেল অন্নপূর্ণা। পেল, জীবনে প্রথম প্রেমজ চুম্বনের স্বাদ।
[Source: Ananda Publishers]
Reviews
There are no reviews yet.