ঐতিহাসিক যখন ইতিহাসের প্রেক্ষিতে কালজয়ী কোনও মহামানবের জীবন ও বাণীর পর্যালোচনা করেন, তখন তাঁকে নির্মোহ দৃষ্টির পরিচয় দিতে হয়। প্রবাদ, পক্ষপাত, ব্যক্তিপূজা ও জনশ্রুতির বাইরে এসে মূল্যায়ন করতে হয় যুগপুরুষদের আবির্ভাবের তাৎপর্য। এই ইতিহাস-ঋদ্ধ গ্রন্থে অধ্যাপক অমলেশ ত্রিপাঠী সেই দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছেন। গ্রন্থবদ্ধ চারটি প্রবন্ধের বিষয় শ্রীরামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দ। সমকালীন সমাজ, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও ধর্মানুশীলনের এক দূরবিস্তারী পটভূমিকায় শ্রীরামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দের জীবন ও সাধনার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করেছেন লেখক। প্রথম প্রবন্ধে তিনি দেখিয়েছেন কোন অর্থে ‘কল্পতরু’ শ্রীরামকৃষ্ণের ঈশ্বরসাধনার সঙ্গে বিজ্ঞানের কোনও বিরোধ নেই এবং ধর্মকে কোন সাধনায় তিনি আনন্দের উৎসবে পরিণত করেছিলেন। দ্বিতীয় প্রবন্ধে আছে শ্রীরামকৃষ্ণের চারজন বিশ্বখ্যাত জীবনীকার ম্যাক্সম্যুলর, রম্যাঁ রলাঁ, ইসারউড ও লেক্স হিকসনের লেখা গ্রন্থের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, গুরুত্ব, বৈশিষ্ট্য এবং ত্রুটি সম্পর্কে মননশীল আলোচনা। স্বামী বিবেকানন্দ কীভাবে বনের বেদান্তকে ঘরে নিয়ে এসেছিলেন তারই মরমী ব্যাখ্যা তৃতীয় প্রবন্ধের বিষয়বস্তু। বিবেকানন্দের শিবজ্ঞানে জীবসেবা আহ্বানের মধ্যে লেখক অন্বেষণ করেছেন ভারতবর্ষের মাটি ও মানুষের ইতিহাস। আবিষ্কার করেছেন স্বামীজীর নববেদান্তভাষ্য এবং চতুর্থ প্রবন্ধে আলোচিত হয়েছে বিবেকানন্দের বুদ্ধ-ভাবনার স্বরূপ। শ্রীরামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ চর্চার ক্ষেত্রে এই গ্রন্থ এক উজ্জ্বল ও ব্যতিক্রমী সংযোজন।
Reviews
There are no reviews yet.