অশীন দাশগুপ্তের স্বল্পসংখ্যক রচনা ছাড়া ভারত মহাসাগর অঞ্চলের সমুদ্রবাণিজ্য নিয়ে বাংলায় লেখা বইয়ের একান্তই অভাব। অথচ মঙ্গলকাব্যের চাঁদ সওদাগর এবং ধনপতির সপ্তডিঙা ভাসিয়ে সমুদ্রবাণিজ্যের আলেখ্য বাঙালির জনমানসে এখনও ভাস্বর। প্রশ্ন হচ্ছে— উক্ত সমুদ্রবাণিজ্যের এই উপাখ্যান কি বাস্তবসম্মত না মঙ্গলকবির কষ্টকল্পনা? অনেক প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিকের ধারণা, ষোড়শ শতকে ভারত সাগরে পর্তুগিজদের আগমনে এক নতুন যুগের সূচনা হয়। সত্যিই তাই? আবার অনেক বিদগ্ধ পণ্ডিতজন মনে করেন যে আলোচ্য সময়ে এশীয়/ভারতীয় সমুদ্রবাণিজ্যের ধারক ও বাহক ছিল অসংখ্য খুদে ‘ফেরিওয়ালা’ জাতীয় ব্যাপারী আর ওই বাণিজ্য শুধু মূল্যবান বিলাসদ্রব্যের বাণিজ্য ছাড়া কিছু নয়। এরকম বক্তব্য কি যুক্তিসংগত? তেমনি আবার কিছু কিছু প্রখ্যাত ঐতিহাসিকের বদ্ধমূল ধারণা, সপ্তদশ শতকে ইংরেজ ও ডাচ কোম্পানির আবির্ভাবে ভারতীয়দের সনাতন স্থলপথে বাণিজ্যের অবলুপ্তি ঘটে। এমন অভিমত কি গ্রহণযোগ্য? অধ্যাপক চৌধুরী দেশবিদেশের বিভিন্ন আর্কাইভসে— বিশেষ করে হল্যান্ডের অলখমেন রেইকসআরকিফ এবং লন্ডনের ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে- অর্ধ-শতাব্দীর গবেষণালব্ধ অসংখ্য দলিল-দস্তাবেজের অনুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ করে শুধু বিস্তারিত তথ্য নয়, পরিসংখ্যান দিয়ে- উপরোক্ত সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন বর্তমান গ্রন্থে, তাই অতীত এখানে জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
[Source: Ananda Publishers]
Reviews
There are no reviews yet.